রাউটার কি?
WiFi আর রাউটার ছাড়া এখনকার সময়ে শহুরে এলাকায় কোন একটি ফ্ল্যাট বা এপার্টমেন্ট কল্পনা করা কষ্টসাধ্য।
এমনকি মফস্বল এলাকায়ও এখন ওয়াইফাই আর রাউটা দেখা যায় হরহামেশাই। তবে কিভাবে কাজ করে এরা? কেনই বা এই রাউটারই ব্যাবহার করে সকলে?
র্তমান সময়ে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটি সময় প্রযুক্তির সান্নিধ্যে কাটাই। আমরা এমন একটি পৃথিবীতে
বসবাস করি যেখানে পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে কয়েক মিলি সেকেন্ডেই যোগাযোগ করা যায়। যেকোন তথ্য জানতে
চাইলে হাতের স্মার্টফোন এর মধ্যে শুধুমাত্র লিখে বা বলে শুনিয়ে দিলেই সেই তথ্য-উপাত্ত আমাদের সামনে হাজির হয়। তবে
এই কাজগুলো হয় কীভাবে? কীভাবে এই অগনিত তথ্য এতো সহজে আমাদের সামনে হাজির হয়? এর পিছনে
কোন জিনিসটি কাজ করে? এর প্রশ্ন গুলোর উত্তর বহুমুখী। কারন শুধুমাত্র কোন একটি মাত্র প্রভাবক আমাদের এতো সুবিধার দোয়ার খুলে দেয় না, কাজ করে অসংখ্য প্রভাবক।
রাউটার কি?
তার মধ্যে প্রধান এবং জনসাধারণের সুপরিচিত একটি প্রভাবক দ্রুত গতির নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্ক আমাদের পুরো পৃথিবীর সাথে সংযুক্ত করে।
তবে আমরা কিভাবে এই নেটওয়ার্ক এর সাথে যুক্ত হই? এই প্রশ্নের উত্তর দুইভাবে হতে পারে।
আমরা হয় মোবাইল ফোনে সিম ব্যাবহার করি অথবা আমরা WiFi প্রযুক্তি ব্যাবহার করি। এখন WiFi প্রযুক্তি নিয়ে একটু বিস্তারিত জানা যাক।
WiFi কী?
WiFi বলতে বুঝানো হয় তারবিহীন নেটওয়ার্ক সিস্টেম যা রেডিও ওয়েভ
ব্যাবহার করে দ্রুতগতীসম্পন্ন ইন্টারনেট এর সাথে যুক্ত করে। WiFi নিয়ে একটি ভুল ধারনা প্রায় সকলের মধ্যেই লক্ষ করা যায়।
অনেকেই মনে করে WiFi এর পূর্ণরুপ “Wireless Fidelity”। বরং ওয়াইফাই একটি ট্রেডমার্ককৃত ব্র্যান্ড এর নাম যা IEEE 802.11x স্ট্যান্ডারড মেনে চলে।
WiFi কীভাবে কাজ করে?
ওইফাই কোন ডিভাইসকে তার নেটওয়ার্ক এর সাথে সংযোগ করে দেয়। প্রতিটি আলাদা নেটওয়ার্ক
সিস্টেমের আলাদা Wireless Access Point থাকে যার মাধ্যমে প্রতিটি নেটওয়ার্ক আলাদাভাবে চিন্হিত করা যায়। আবার এই প্রতিটি এক্সেস পয়েন্ট
রাউটার থেকে আসা ব্যান্ডউইথ এর সাথে যুক্ত হয়ে ইন্টারনেটে একটি পরিচয় নিয়ে প্রবেশ করাতে পারে। এক্ষেত্রে একটি ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক এর রাউটার এর সাথে যে
রাউটার কি?
কয়টি ডিভাইস যুক্ত থাকে সবগুলই একই এক্সেস পয়েন্টে থাকে। এই Wireless Access Point বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সী, চ্যানেল,
ব্যান্ডউইথ ব্যাবহার করে রাউটার সাথে যুক্ত থাকা ডিভাসগুলোকে ইন্টারনেটে সংযুক্ত করে। তবে
রাউটার কী?
এই প্রশ্নের উত্তর সহজভাবে দিতে চাইলে বলা যায় – একটি নেটওয়ার্কে সংযোগকারী হার্ডওয়্যর ও সফটওয়্যার এর সংমিশ্রিত ডিভাইস।
একটু বিস্তারিত বলা যাক। আমরা যখন কোন ডিভাইসকে ইন্টারনেটে সংযোগ করতে চাই তখন ডিভাইস ও ইন্টারনেট এর মধ্যে
একটি সংযোগকারী প্রয়োজন যে সংযোগের পথ তৈরি করবে। রাউটার মূলত এই কাজটি করে। রাউটার এর সাথে তার
দিয়ে ওয়াইফাই সংযোগ করা থাকে। ওয়াইফাই থেকে প্রাপ্ত নেটওয়ার্ক সিগন্যাল ডিভাইসের সাথে তারবিহীন সংযোগে ডিভাইসকে ইন্টারনেটের
রাজ্যে প্রবেশ করায়। এক্ষেত্রে প্রতিটি রাউটারের একটি স্বতন্ত আইপি এড্রেস থাকে এবং ঐ
রাউটারের সাথে যুক্ত ডিভাইস গুলো একটি মাত্র আইপি এড্রেস ব্যাবহার করে এবং অভিন্ন নেটওয়ার্ক ব্যাবস্থা গড়ে তোলে।
রাউটার কীভাবে কাজ করে?
এই জিনিসটি বুঝার জন্য আমরা একটা ঘরকে কল্পনা করতে পারি যেখানে অনেকগুলো ডিভাইস যেমন মোবাইল,
টিভি, প্রিন্টার, কম্পিউটার, ট্যাবলেট ইত্যাদি রয়েছে এবং আছে একটি রাউটার। রাউটার এর সাথে তারবিহীনভাবে ডিভাইসগুলো যুক্ত থাকে এবং
রাউটার আবার যুক্ত থাকে WiFi নেটওয়ার্ক সার্ভিস প্রোভাইডার’র নেটওয়ার্ক এর সাথে। ঐ ঘরের যেকোন
ডিভাইসের যখন তথ্য শেয়ার করে তখন তা নেটওয়ার্ককে রাস্তা হিসেবে ব্যাবহার করে এবং রাউটার এর মধ্যেস্থতাকারী
হিসেবে কাজ করে। আবার যখন তথ্য গ্রহন করার প্রয়োজন হয় তখন আইপি এড্রেস এর মাধ্যমে তথ্য রাউটার ডিভাইসে পৌছে দেয়।

WiFi ব্যাবহারের সুবিধা
WiFi নেটওয়ার্ক সিস্টেম একটি বহুল সমাদৃত নেটওয়ার্ক ব্যাবস্থা যা এখনকার সময় প্রতিটি স্থানেই লক্ষ করা যায়। WiFi এর মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত
আদান-প্রদান এর গতি তুলনামূলক বেশি হওয়ায় এর মাধ্যমে কার্যকর ও দ্রুত তথ্য আদান-প্রদান করা যায়।
ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে কোন ডিভাইসকে যুক্ত করা অনেক সহজ, আবার ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক
কোন স্থানে স্থাপন করার জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় না। তাছাড়া শুধুমাত্র ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক এর নির্ধারিত এলাকায় থেকেই কোন
নির্দিষ্ট নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকা যায়। আবার ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক এর জন্য ব্যাবহৃত টেকনিক্যাল সামগ্রী এর সহজলভ্যতা WiFi নেটওয়ার্ক এর অনেক বড় একটি সুবিধা।
WiFi এর অসুবিধা
যখন কোন একটি ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে অনেকগুলো ডিভাইস সংযুক্ত করা হয় তখন এর
তথ্য আদান-প্রদান এর পরিমান কমে যায় যা ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক সিস্টেমের একটি বড় অসুবিধা। ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক যেকেউ শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট
পাসওয়ার্ড ব্যাবহার করে ঐ নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে পারে বলে এই নেটওয়ার্কে তথ্য নিরাপত্তা কম থাকে।
যদি কখনো ওয়াইফাই কাজ না করে তখন কিছু কিছু ডিভাইসে ট্রাবলশুট করতে হয় যা সময়সাপেক্ষ।