অনলাইনে যেভাবে টাকা আয় করা যায়:
প্রযুক্তি আমাদের জীবন ও কর্মে অনেক পরিবর্তন নিয়ে আসছে। দুনিয়াজুড়ে বাড়ছে অনলাইন জগতের প্রতি নির্ভরতা।
অনলাইনকে কাজে লাগিয়ে অর্থ উপার্জনের নানান পথ তৈরি হয়েছে। এসব কাজ যেমন আরামদায়ক,
তেমনি সৃজনশীলও বলা যায়। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে গৃহিণী কিংবা নিয়মিত চাকরি করছেন—এমন ব্যক্তিরাও অনলাইনের
মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারেন। বাংলাদেশে বসে অনলাইনে যেভাবে ডলার বা টাকা আয় করবেন,
তা জানতে আমরা আলাপ করেছি তেমনই কিছু পেশাদার ব্যক্তির সঙ্গে। চলুন জেনে নিই কীভাবে অনলাইনে আয় করা যায়।
আধেয় বা কনটেন্ট তৈরি করে আয় করুন
এক দশকের বেশি সময় ধরেই অনলাইনে বড় ধরনের টাকা আয়ের সুযোগ আছে। আপওয়ার্ক,
ফাইবারসহ বিভিন্ন অনলাইন মার্কেট প্লেসে ঢুঁ মারতে পারেন কনটেন্ট-সংক্রান্ত সুযোগ দেখতে। এ ছাড়া ফেসবুক বা লিংকডইন থেকে
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কনটেন্ট তৈরির কাজের খোঁজ পাবেন। স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের প্রাক্তন
শিক্ষার্থী মাহফুজ কায়সার বলেন, ‘এখন অনলাইনে নানান ধরনের কনটেন্টের চাহিদা। যে পরিমাণ চাহিদা,
সেই পরিমাণ কনটেন্ট লেখক নেই। তাই নিজের মধ্যে সেই গুণ থাকলে কাজে লেগে পড়তে পারেন আপনিও।
কনটেন্টের ধরনের ওপর নির্ভর করে আপনি সেখান থেকে পারিশ্রমিক পাবেন। সাধারণ ভিডিও চিত্রনাট্য তৈরি
বা ফেসবুকে নিয়মিত লেখার মাধ্যমে, মাসে ১২ থেকে ১৬ হাজার টাকা আয় সম্ভব।
অনলাইনে যেভাবে টাকা আয় করা যায়
আইটি উদ্যোক্তা মাহামুদুল হাসান মাসুম বলেন, ‘ফ্রিল্যান্স ডিজাইন, সোশ্যাল মিডিয়া, রিমোট ডেটা এন্ট্রির মতো
কাজ করে টাকা আয়ের সুযোগ আছে। এসব কাজের জন্য যে ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হতে হবে,
বিষয়টি এমন নয়। আপনি চাইলে ইউটিউবের ভিডিও দেখেও প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।
সাধারণ ল্যাপটপ ব্যবহার করেই এসব কাজ শুরু করা যায়।’
ইন্টারনেট মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলছে। মানুষ এখন অনলাইনে অর্থ আয়ের জন্য নানা কৌশল প্রয়োগ করছে।
অনলাইনে আয়ের নানা পথও তৈরি হয়েছে। তবে অনলাইনে কাজ করে আয় করতে গেলে কোন প্ল্যাটফর্ম ধরে এগোচ্ছেন,
সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
অনলাইনে আয় করার নানা সুযোগ থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রতারণার মুখে পড়তে হতে পারে।
অনলাইনে কাজ করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই এ ধরনের প্রতারণামূলক কাজের ক্ষেত্র
থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে হবে। কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট ও রিসোর্স আছে, যা কাজে লাগিয়ে
অনলাইনে আয় করতে পারবেন। জেনে নিন এসব সম্পর্কে:
ফ্রিল্যান্সিং
অনলাইনে আয়ের ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার বিষয়টি সবচেয়ে জনপ্রিয়।
বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে ফ্রিল্যান্স কাজের সুযোগ দেয় কয়েকটি ওয়েবসাইট।
সেখানে অ্যাকাউন্ট খুলে দক্ষতা অনুযায়ী কাজের জন্য আবেদন করতে হয়। কাজদাতা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী যোগাযোগ করে ফ্রিল্যান্সারকে কাজ দেয়।
কয়েকটি ওয়েবাসাইটে কাজের দক্ষতার বিবরণ জানাতে হয়, যাতে ক্রেতা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।
এসব সাইটের মধ্যে ফাইভার ডটকম, আপওয়ার্ক ডটকম, ফ্রিল্যান্সার ডটকম ও ওয়ার্কএনহায়ার ডটকমে ফ্রিল্যান্সিং
কাজ পাওয়া যায়। ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০০ ডলার পর্যন্ত আয় করা যায় এসব সাইট থেকে। মনে রাখতে হবে, কাজ শেষ
করার পর কাজদাতার অনুমোদন পেলেই তবেই অর্থ ছাড় দেবেন তিনি। এ ক্ষেত্রে কাজের মানের ওপর কাজদাতা
রেটিং দিতে পারেন। গ্রাহকের পছন্দ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করে দিতে হয় ফ্রিল্যান্সারকে। বিভিন্ন অনলাইন পেমেন্ট
মাধ্যম ব্যবহার করে অর্থ আনা যায়।

নিজের ওয়েবসাইট তৈরি
এখন নিজের ওয়েবসাইট তৈরির জন্য অনলাইনেই অনেক উপাদান পাওয়া যায়।
এর মধ্যে ডোমেইন নির্বাচন, টেমপ্লেট ও ওয়েবসাইট তৈরির নকশা প্রভৃতি। যখন পাঠক
বা দর্শককে ওয়েবসাইটের বিভিন্ন কনটেন্ট সেবা দেওয়ার প্রস্তুতি সারা, তখন গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন।
গুগলের বিজ্ঞাপন যখন সাইটে দেখানো শুরু হবে এবং তাতে ক্লিক পড়বে, তখন আয় আসতে শুরু করবে।
ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা দর্শক যত বেশি হবে, আয়ের পরিমাণ তত বাড়বে
অনলাইন ইনকাম
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
এই পদ্ধতিতে আয়ের ক্ষেত্রেও নিজের ওয়েবপেজ বা ব্লগ প্রয়োজন। যখন ওয়েবসাইট বা ব্লগ চালু হবে,
তখন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লিংক তাতে যুক্ত করতে পারবেন।
যখন আপনার সাইট থেকে ওই প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা কোনো দর্শক কিনবেন, তখনই আপনার আয় আসতে শুরু করবে।
জরিপ, সার্চ ও রিভিউ
অনলাইন জরিপে অংশ নিয়ে অর্থ আয় করতে পারেন। অনেক ওয়েবসাইট জরিপে অংশ নিলে অর্থ দেয়।
এ ছাড়া অনলাইন সার্চ ও পণ্যের পর্যালোচনা লিখে আয় করতে পারেন। তবে, এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের পাশাপাশি
ক্রেডিট কার্ড বা ব্যাংকিং তথ্য দেওয়া লাগতে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে কাজ করার সময় সতর্কভাবে কাজ করতে হবে।
এ বিষয়ে কাজের সময় কোনটি প্রকৃত কাজ আর কোনটি স্ক্যাম—যাচাই-বাছাই করে নিয়ে কাজ করতে পারেন।